চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচারণা চালানোর অভিযোগ উঠেছে ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে ছাত্রদল-সমর্থিত ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ এবং ‘বিনির্মাণ শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের প্রার্থীরা এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগ ও আচরণবিধির লঙ্ঘন
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে প্রজেকশন মিটিং করে। এতে সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করে প্রচারণা চালানো হয়েছে, যা নির্বাচনী আচরণবিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন।
চাকসু নির্বাচনী আচরণবিধির ৪(খ) ধারা অনুযায়ী, প্রচারণা প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা ৩০ মিনিটের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। বিশেষত, সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাস এলাকায় কোনো ধরনের সাউন্ড সিস্টেম বা মাইক ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়াও, ৬(ঞ) ধারায় উল্লেখ আছে যে সভা-সমাবেশে ক্যাম্পাস বা অডিটরিয়ামের ভেতরে সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা গেলেও কোনো অবস্থাতেই তা সন্ধ্যার পর ব্যবহার করা যাবে না।
ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন অভিযোগ করেন, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকেই শিবির-সমর্থিত জোটটি নিয়মিতভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে আসছে এবং এ পর্যন্ত তাঁরা মোট আটটি অভিযোগ করেছেন।
শিবির প্রার্থীর স্বীকারোক্তি ও কমিশনের পদক্ষেপ
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শিবির-সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী সাঈদ বিন হাবিব সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে তিনি দাবি করেন, তাঁরা নিয়ম মেনেই কেন্দ্রীয়ভাবে ও নারী হলগুলোতে প্রজেকশন মিটিং করেছেন এবং জিরো পয়েন্টের মিটিংয়ের জন্য কমিশনের অনুমতি ছিল। যদিও আচরণবিধির ৬(ঘ) অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে সর্বমোট তিনটির বেশি প্রজেকশন মিটিং করা যাবে না।
নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন জানিয়েছেন, অভিযোগের বিষয়ে আজ মঙ্গলবার বেলা একটায় আচরণবিধি কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, সাড়ে তিন দশক পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামীকাল বুধবার চাকসু নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল ছিল নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার শেষ দিন।