প্রায় আট বছর আগে ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত আনিছ আহম্মেদ নীলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান আজ মঙ্গলবার এই মামলার রায় ঘোষণা করেন।
সাজার বিস্তারিত:
ধর্ষণের দায়ে: আদালত আনিছ আহম্মেদ নীলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন। এই অর্থদণ্ড দিতে ব্যর্থ হলে তাঁকে আরও এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
অপহরণের দায়ে: অপহরণের জন্য আলাদা ধারায় নীলকে আরও ১৪ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অর্থদণ্ড অনাদায়ে অতিরিক্ত ছয় মাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী রাশেদুল ইসলাম জানিয়েছেন, আসামি আনিছ আহম্মেদ নীল পলাতক থাকায় আদালত তাঁর বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করেছে।
এছাড়াও, ট্রাইব্যুনাল আসামির স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে অর্থদণ্ডের টাকা ভিকটিমের পরিবারকে প্রদানের জন্য ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দিয়েছে।
মামলার পটভূমি:
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ওই ছাত্রীর সঙ্গে আসামির ফেসবুকে পরিচয় হয়। এরপর নীল তাকে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করলে পরিবার নিষেধ করলেও তাতে কর্ণপাত করেননি।
২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর দুপুর আড়াইটার দিকে মেয়েটি কোচিংয়ের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে আজিমপুর যায়। কোচিং শেষে সে আর বাড়ি ফেরেনি। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে জানা যায়, দুপুর ২টা ৪০ মিনিটের দিকে কামরাঙ্গীরচর থানাধীন বড়গ্রাম চেয়ারম্যান বাড়ির মোড় থেকে আনিছ আহম্মেদ নীলসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন জোর করে মেয়েটিকে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা ওই বছরের ৮ নভেম্বর কামরাঙ্গীরচর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ এসআই মো. মামুন হোসেন নীলের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, কোচিংয়ে যাওয়ার পথে মেয়েটিকে জোর করে অটোরিকশায় তুলে প্রথমে মিরপুরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং এরপর একেক দিন একেক জায়গায় নিয়ে আসামি তাকে ‘ধর্ষণ’ করে।
অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে নীলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে আদালত। মোট ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে এই রায় ঘোষণা করে।