গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় ভুল চিকিৎসার কারণে এক প্রসূতি ও তাঁর নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিহতদের স্বজনরা পলাশবাড়ীর ‘মা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোম’-এ হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে। পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করলে এবং তারা ক্লিনিকে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা চালালে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
নিহত প্রসূতির নাম পারভীন আক্তার ওরফে পারুল বেগম (২৫)। তিনি পলাশবাড়ী পৌরসভার জামালপুর গ্রামের বাদশা মিয়ার মেয়ে এবং মহদীপুর ইউনিয়নের বিশ্রামগাছী গ্রামের শামীম মিয়ার স্ত্রী। তাঁর আগে থেকেই আরও দুটি সন্তান রয়েছে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পারুল বেগমকে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য মা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে চিকিৎসক অস্ত্রোপচার শুরু করেন। কিন্তু এর কিছুদিন পর ভোরবেলায় পারুল এবং তাঁর নবজাতক উভয়েরই মৃত্যু হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ মৃত পারুলকে রংপুর রেফার করার চেষ্টা করলে স্বজনরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং ক্লিনিকে ভাঙচুর শুরু করেন।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, চিকিৎসায় চরম অবহেলা ও গাফিলতির কারণেই মা ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও ক্লিনিকের মালিকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং ক্লিনিকটি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, পলাশবাড়ী পৌর শহরের নুনিয়াগাড়ী এলাকার ঘোড়াঘাট রোডে অবস্থিত এই ক্লিনিকটির মালিক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স ফাতেমা বেগম। স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, এই ক্লিনিকে প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর একাধিক অভিযোগ আগেও উঠেছিল, যা বিভিন্ন মহলের সহায়তায় ধামাচাপা দেওয়া হয়েছিল।
পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুলফিকার আলী ভুট্টু জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় দুপুর দেড়টা পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।